আমি বিশ্ব রোড এর ফ্লাই ওভার ধরে হাঁটছি ৷ আজকে কোনও কারণে traffic jam নাই ৷ ঢাকা শহর, মাঝে মধ্যে আমাদের সাথে রসিকতা করে ৷ আজকে মনে হয় এমন একটা দিন ৷ আমি যে পথ ধরে হাঁটছি এ পথ ধরে মানুষ তেমন হাটে না ৷ বিশ্ব রোড বলে কথা ৷ মানুষ সাই সাই করে গাড়ি ছুটিয়ে যাচ্ছে আর অবাক করে আমার দিকে তাকাচ্ছে ৷ আমি যদিও বুঝলাম না তার কারন কি৷আমার বিপরীত দিক থেকে একজন লোক আসছে ৷ তার পড়নে সাদা পাঞ্জাবী পায়জামা তার উপর উনি বেশ দামী একটা সোয়েটার পড়েছেন ৷ দেখতে খুব জ্ঞানী লাগে ৷ মাথায় কাঁচা পাকা চু ল ৷ মোচ গুলোও কাঁচা পাকা ৷ কাল ফ্রেম এর চশমা পড়েছেন৷ তিনি আমার কাছে আসতে আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম
– uncle
– – জী আমাকে বলছেন ?
– জি জি , এখানে তো আর কেউ নাই
– ওহ, হ্যাঁ বলেন ৷
যদিও আমার ইচ্ছা ছিল, তাকে রিফাত এর কথা জিজ্ঞেস করব কিন্তু আমি বললাম
– আচ্ছা আপনি কি scientist ?
লোকটা মোটেও বিরক্তি দেখাল না
– কেন বল তো ?
– আমি একটা research করছি ৷ মানুষের appearance এর সাথে তার পেশা ও কাজ কর্মের কদ্দুর relation আছে তাই নিয়ে ৷
– আচ্ছা আচ্ছা তাই নাকি, দারুণ তো ৷ বেশ ৷
– তো, আপনি কি scientist ?
– না না তেমন কিছু না, আমি সাহিত্যিক, গল্প উপন্যাস লিখি ৷
Scientist আর সাহিত্যিক দের মাঝে কি পার্থক্য আমি তা আজও বুঝতে পারি নাই , আমার কাছে এরা একই৷
– আচ্ছা আসল কথা বলি, আপনি কি রিফাত কে দেখেছেন ?
লোকটা মোটেই অবাক হল না,
– তু মি কোন রিফাত এর কথা বলছ?
– কে আবার আমার বন্ধু রিফাত
– তাকে কি আমি চিনি ?
– আপনি চিনেন কিনা আমি কি জানি , চেনার দরকার কি, তাকে রাস্তা ঘাটে দেখেছেন?
– আমি সম্ভবত দেখি নাই, তু মি কি তাকে খুঁজছ?
– না খুঁজলে আপনাকে জিজ্ঞেস করব কেন ?
– আমি সম্ভবত দেখি নাই ৷ তু মি কি তার কোনও ছবি দেখাতে পারবে ?
তাকে ছবি দেখানোর মত ধৈর্য আমার নাই ৷ আমি আমার পথে হাটা শুরু করলাম ৷ এখন দুপুর ৩ টা বাজে ৷ ৩ টা কি দুপুর ? নাকি বিকেল ? আমি এবার অপু কে ফোন দিলাম ৷ অপু রিফাত এর
undergrad এর বন্ধু ৷ অপু আগে নিকু ঞ্জ থাকত ৷ এখন অবশ্য কই থাকে কেউ জানে না ৷ অপু মারাত্মক briliant student ৷ ওর কাছে গেলে নিজেকে বোকা বোকা লাগার কথা যে কোনও
মানুষের ৷ আমার অবশ্য যে কারো সামনেই নিজেকে বোকা বোকা লাগে ৷
– অপু
– কে বলেছেন ? (কোনও ভদ্রতা নাই ফোন ধরেই কে বলছেন!)
– অপু তু মি আমাকে চেন না, কিন্তু তু মি রিফাত কে চেন , আমাকে না চিনলে ও হবে ৷ রিফাত কে কি তু মি দেখেছ ?
– আরে বন্ধু তু মি ! কেমন আছিস,
– রিফাত কে দেখেছিস ?
– না রে, কেন কি হ
কথা শেষ হওয়ার আগে আমি ফোন কেটে দিলাম ৷ একজন পত্রিকা ওয়ালা আমার পাস দিয়ে যাচ্ছে ৷ পত্রিকা ওয়ালাদের হকার বলে কেন আমি বুঝি না ৷ যে বাদাম বেচে সে বাদাম ওয়ালা ৷ যে চানাচু র বেচে সে চানাচু র ওয়ালা ৷ কিন্তু যে পত্রিকা বেচে সে হকার ৷ পত্রিকা ওয়ালা কিছু marketing activity সম্পন্ন করল৷ কিন্তু আমি পত্রিকা না কেনায় সে ভীষণ হতাশ ৷ আমি পত্রিকা পড়ি না ৷ কিন্তু এই লোক আমার পিছু ছাড়তে নারাজ ৷ সে আমার কানের পামে ঘেন ঘেন করছে আর আমার সাথে হাঁটছে ৷
একটা গল্প বলি ৷ একবার আমি ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছি ৷ এক পিচ্চি আমার পা ধরে বসে পড়ল ৷ আমি নিজেকে রাজা মহারাজা ভাবতে শুরু করলাম ৷ আমার পাশের বসা চাচা ভীষণ ক্ষেপে উঠলেন ৷ উনি নিশ্চয়ই jealous feel করছিলেন ৷ পাশের লোক রাজা হয়ে গেল ৷ কেন তার পা ধরে বসে পড়ল না, রাজা আর রাজত্বের অনুভূ তি দারুণ ৷ তিনি বেশ কয়েকটা ঝাড়ি দিতেও ছেলেটা আমার পা ছাড়ল না ৷ প্রায় ১০ মিনিট আমার পা ধরে ছেলেটা বসে আছে ৷ আর একটু পর পর আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে কি যেন বলছে ৷ আমি ভাবলাম নিচ্ছই আমার প্রজা কোনও অন্যায় করেছে ৷ আমার কাছে ক্ষমা চাইছে ৷ আমি আমার হাতটি তু লে তার মাথায় রাখলাম ৷ রাজা মহা রাজার মত গম্ভীর করে বললাম যা ক্ষমা করে দিলাম ৷
দুঃখের বিষয় ছেলেটা আমার কথা কি বুঝল আমি জানি না , সে একই ভাবে নির্বিকার হয়ে আমার পা ধরে ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকল ৷ একটু পড় দেখলাম আমার পাসে বসা বুড়ো টা ২ টাকার একটি নোট বের করে ছেলেটাকে দিতেই সে টাকা টি লুফিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল ৷
আমি মনে মনে ভাবলাম হায়, যতই টাকা বিলাও তু মি রাজা মহারাজা হতে পারবে না হে বুড়ো ৷ টাকা দিয়ে রাজ্য কেনা যায় না ৷ রাজত্ব বড় অদ্ভু ত জিনিস ৷ দেখা যাবে সারা জীবন যে রাজা, প্রজাদের জন্যে করে যাবে, যাদের জন্যে জীবন বিলিয়ে দিবে, দিনের শেষে তারাই তোমাকে ভু ল বুঝবে ৷ এক দল তোমাকে শূলে চড়াতে ও তারা পিছ পা হবে না ৷ আরেক দল ভীতু কাপুরুষ এর
নির্বাচিত পোস্ট মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে ৷ দিন যাবে, বছর যাবে, যুগ পেরিয়ে যাবে ৷ কাপুরুষ দের মনে জমে থাকা তু ষের অগ্নি স্ফু লিঙ্গ গুলো আস্তে আস্তে দাবানলে পরিণত হবে ৷ হবে কি ?